শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৩

BASUDEB


আল্লাহ ডিম পাড়ে, নামাজের দরকার নেই (নাউজুবিল্লাহ) :
কোটালীপাড়ায় হিন্দু শিক্ষকের আল্লাহ ও নামাজ নিয়ে কটূক্তি গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া প্রতিনিধি « আগের সংবাদ 528 পরের সংবাদ» গোপালগঞ্জে কোটালীপাড়ার একটি স্কুলের শ্রেণীকক্ষে ‘আল্লাহ ও নামাজ’ নিয়ে কটূক্তি করায় দেবব্রত রায় (৪০) নামে এক স্কুলশিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী স্কুল ঘেরাও ও শিক্ষককে অবরুদ্ধ রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই শিক্ষককে স্কুল থেকে গ্রেফতার করে কোটালীপাড়া থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। গতকাল সকাল ১১টায় উপজেলা সদরের কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইন-স্টিটিউশনের সহকারী প্রধান শিক্ষক দেবব্রত রায় বুধবার সপ্তম শ্রেণীর ইংরেজি ক্লাস নেয়ার সময় ‘আল্লাহ ও নামাজ’ নিয়ে কটূক্তি করে। বিষয়টি শিক্ষার্থীরা এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের জানিয়ে দেয়। এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল সকাল ১১টার দিকে স্কুলের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করলে ওই শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের রুমে আশ্রয় নেন এবং নিজেকে রক্ষার জন্য রুমের ভেতর থেকে দরজা আটকে দেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিকাইল ও ওসি মো. তোতা মিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এলাকাবাসীকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে শিক্ষক দেবব্রত রায় স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এরপর স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা শিক্ষক দেবব্রত রায়কে পুলিশে সোপর্দ করেন। উত্তেজিত জনতার চোখ ফাঁকি দিয়ে পুলিশ ভ্যানে করে ওই শিক্ষককে থানায় নিয়ে আসা হয়। সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র তৌফিক তালুকদার ও হেলাল শাহ সাংবাদিকদের জানায়, দেবব্রত স্যার ইংরেজি ক্লাসে আমাদের পড়ানোর সময় বলে, ‘আমি দেখেছি, আল্লাহ ডিম পাড়ে, আর তোমরা সেই ডিম থেকে জন্মগ্রহণ করেছো।’ ওই শিক্ষক আরও বলেন, ‘তোমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার প্রয়োজন নেই। তোমরা ঠিকমত দুই ঘণ্টা করে ক্লাসের বই পড়লেই যথেষ্ট।’ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেও অভিযুক্ত শিক্ষক দেবব্রত রায় এমন ধৃষ্টতাপূূর্ণ মন্তব্য করার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, আমি ‘আল্লাহ ও নামাজ’ নিয়ে কোনো কটূক্তি করিনি। শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীরা আমার কথাগুলো বুঝতে পারেনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিকাইল বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক আমাকে বলেছেন, ক্লাস চলার সময় শিক্ষার্থীরা তাকে প্রশ্ন করে, ডিম আগে না বাচ্চা আগে। এ প্রসঙ্গ নিয়ে আমি বিষয়টি চেপে যেতে বলি। আর আল্লাহ ও নামাজ নিয়ে তিনি কটূক্তি করেননি বলে জানান। তবে এ ঘটনায় তিনি স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে পদত্যাগ করেছেন। কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোতা মিয়া বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট হতে পারে—এ আশঙ্কায় ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয় নিয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। এ কারণে তাকে ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। কোটালীপাড়ার কুরপালা মাদরাসার মোহতামেম মাওলানা জাকির হোসেন বলেন, ‘আল্লাহ, রাসুল ও নামাজ’ নিয়ে কেউ যদি কটূক্তি করে, তাকে ছেড়ে দেয়া হবে না। অপরদিকে যদি কেউ সাম্প্রদায়িক শান্তি বিনষ্ট করার চেষ্টা করে, তাকেও শাস্তি পেতে হবে।

0 মন্তব্য(গুলি) :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন